রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ পালায় না। ১/১১ এর সময় আর কোনদিন রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছেন তারেক রহমান। বিএনপি এখন তাকে নেতা মেনেছে। বিএনপির মির্জা ফখরুল এর জবাব দিয়ে বলেছেন, একমাত্র খালেদা জিয়াই তখন পালাননি।
মির্জা ফখরুল তীর্যক বলার চেষ্টা করেছেন, শেখ হাসিনাই তখন পালিয়েছিলেন অথবা দেশের বাইরে চলে গিয়েছিলেন! আসল সত্য চিকিৎসার জন্যে কিছুদিনের জন্যে বাইরে গেলেও গ্রেফতার বরন করতে শেখ হাসিনা তখন দেশে ফিরে এসেছিলেন। শেখ হাসিনা যাতে তখন দেশে ফিরতে না পারেন সে চেষ্টা ১/১১ওয়ালারা করেছিল। বাধা তিনি মানেননি।
পূর্বাপর আরও কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দেয়া দরকার। ১/১১ওয়ালাদের পরিকল্পনা ছিল দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। এটা কিন্তু প্রথম আলো-ডেইলি স্টার, মাহমুদুর রহমান মান্নাগংও তখন চেয়েছেন। তারেক-কোকোর হাওয়া ভবনের দুর্নীতি ছিল ১/১১’এর অন্যতম কারনও।
কিন্তু সেই সরকার শুরু থেকে খালেদা জিয়ার প্রতি বিশেষ সদয় ছিল। সে কারনে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হলেও খালেদাকে অনেক দিন গ্রেফতার করা হয়নি। তারেক-কোকোকে গ্রেফতার করা হলেও খালেদা জিয়া তখন সেনানিবাসের বাসা থেকে প্রতিদিন ফোনে বিএনপির বিদেশের নানা শাখা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে বলে মিডিয়ায় টিকে ছিলেন।
ওই সময় প্রচার হয় খালেদাকে যে কোন সময় সৌদি আরব পাঠিয়ে দেয়া হবে অথবা তিনি সৌদি আরব চলে যাচ্ছেন। তখন ঢাকার সৌদি রাষ্ট্রদূত সেনানিবাসের বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে এসে মিডিয়াকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন যদি স্বেচ্ছায় যেতে চান তবে তাকে সেখানে ওয়েলকাম করা হবে।
খালেদা তখন শর্ত দেন, তার দুই ছেলেকে আগে মুক্তি দিতে হবে। তখন চিকিৎসার কথা বলে তাদের বিদেশ যাত্রার ব্যবস্থা করা হয়। প্রচার হয় তারেককে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। এতে তারেক মেরুদন্ডে আঘাত পেয়েছেন। মেরুদন্ডের চিকিৎসার জন্যে তারেক চলে যান ব্রিটেনে। সেখানে ২০০৪ সালেই তার জন্যে বাড়ি কেনা হয়েছিল।
কোকোর জন্যে বাড়ি কেনা ছিল ব্যাংককে এবং কুয়ালালামপুরে। চিকিৎসার জন্যে কোকো ব্যাংকক যান। তখনই জানা যান বিদেশ যাত্রার আগে তারেক-কোকো দু’জনেই আর কোন দিন রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়েছেন। তারেকের রাজনীতি না করার কমুচলেকা সম্পর্কে তখন জিজ্ঞেস করা হলে খালেদা জিয়া বলেন, তারেক অসুস্থ। তার এখন চিকিৎসা দরকার।
ছেলেরা বিদেশ চলে যাবার পর খালেদা জিয়া যে কোন সময় সৌদি আরব চলে যাচ্ছেন এই গুজবে বিমান বন্দরে সাংবাদিক-ফটো সাংবাদিকরা কয়েক দিন-রাত বিনিদ্র কাটান। এক পর্যায়ে জানা গেল খালেদা জিয়া শর্ত দিয়েছেন, তার জন্যে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারন প্যাসেঞ্জার ফ্লাইটে তিনি যাবেন না।
এরপর খবর রটে দুবাই থেকে বিশেষ একটি ভাড়া করা বিমান আসবে। সেই বিমানেই সৌদি আরব চলে যাবেন খালেদা জিয়া। কিন্তু দিন যায় রাত আসে, কথিত বিমানতো আর আসেনা। এরপর জানা গেল বিশেষ বিমান না আসার আসল কারন।
প্রশ্ন ওঠে এই বিশেষ বিমানের ভাড়া কে দেবে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বলা হয়, ভাড়া খালেদা জিয়াকে দিতে হবে। কারন স্পেশাল ফ্লাইট তিনি চেয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া বলেন, তিনি যেহেতু স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন না তাই ভাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দিতে হবে।
এভাবে নয় মন ঘি জোগাড় হয়নি, রাধাও নাচেনি! আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন মাথা দুলিয়ে বলছেন, হুম! একমাত্র তার নেত্রী খালেদা জিয়া তখন বিদেশ পালিয়ে যাননি!